ময়মনসিংহ: শেরপুরে ভুল চিকিৎসার অভিযোগে আশা আক্তার (২৮) নামে এক প্রসূতির মৃত্যু হয়েছে। শনিবার (১৮ অক্টোবর) বিকেলে শহরের নারায়ণপুর এলাকায় অবস্থিত শেরপুর এভারকেয়ার হাসপাতালে এ ঘটনাটি ঘটে।
মৃত আশা আক্তার সদর উপজেলার কুসুমহাটি এলাকার মো. জাহিদ হাসানের স্ত্রী। তিনি এক সন্তানের জননী ছিলেন এবং এবার তার দ্বিতীয় সন্তানের জন্মের সময় এই দুর্ঘটনা ঘটে।
ঘটনার পরপরই ক্ষুব্ধ স্বজনরা এভারকেয়ার হাসপাতাল ঘেরাও করে বিক্ষোভ শুরু করেন। পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কেচিগেট বন্ধ করে দেয়। খবর পেয়ে পুলিশ সুপার মো. আমিনুল ইসলাম ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) নাসরিন আক্তারের নেতৃত্বে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
স্বজনদের অভিযোগ, শুক্রবার গর্ভবতী আশা আক্তারকে সিজারিয়ান অপারেশনের জন্য এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। শনিবার দুপুরে চিকিৎসক ডা. লুৎফর রহমানের তত্ত্বাবধানে তার সিজারিয়ান অপারেশন সম্পন্ন হয়। অ্যানেস্থেসিয়ার দায়িত্বে ছিলেন ডা. মুহাম্মদ জসিম মিয়া।
অপারেশনের কিছুক্ষণ পর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আশার পরিবারকে জানায়, তার শারীরিক অবস্থা আশঙ্কাজনক। পরে তাকে দ্রুত অ্যাম্বুলেন্সে করে শেরপুর জেলা সদর হাসপাতালে পাঠানো হলে সেখানে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
মৃত প্রসূতির ফুফু হালিমা বেগম বলেন, “আমার ভাতিজি একদম সুস্থ ছিল, হেঁটে হেঁটে অপারেশন কক্ষে গিয়েছিল। ডাক্তারদের অবহেলার কারণেই তার মৃত্যু হয়েছে। আমরা এর বিচার চাই।”
আশার বড় ভাই মো. অপূর্ব বলেন, “আমার বোন একদম সুস্থ ছিল। সিজারের সময় ভুল চিকিৎসা ও অবহেলার কারণেই তার মৃত্যু হয়েছে। এখন তার এক ছেলে ও সদ্যোজাত মেয়ে মা হারিয়ে অনাথ হলো। আমরা দোষীদের কঠোর শাস্তি চাই।”
এ বিষয়ে শেরপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জুবায়দুল আলম বলেন, “খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আমরা ঘটনাস্থলে যাই। বিষয়টি তদন্ত করে প্রকৃত দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
তবে ঘটনার পর যোগাযোগের চেষ্টা করেও এভারকেয়ার হাসপাতালের কোনো কর্মকর্তাকে পাওয়া যায়নি বলে জানান তিনি।