ময়মনসিংহ: শেরপুরের সীমান্তবর্তী অঞ্চলে প্রচণ্ড ঠাণ্ডায় বেড়েছে পুরাতন শীতের কাপড় বিক্রি। শীত বেড়ে যাওয়ায় গারো পাহাড়ি অঞ্চলের ঝিনাইগাতী, শ্রীবরদী ও নালিতাবাড়ীর হাট-বাজার ও ফুটপাতে কম দামে পুরনো গরম কাপড় কিনতে ভিড় জমাচ্ছেন নিম্নমধ্যম আয়ের মানুষেরা।
এ ছাড়া ফুটপাতের পাশাপাশি ভ্যান ও পিকআপে আসা পুরনো শীতের পোশাক কিনছেন অনেকেই। প্রতিদিন ভালো টাকার বেচাকেনা হচ্ছে জানান ব্যবসায়ীরা।
ঝিনাইগাতী উপজেলা সদর বাজারের পুরনো গরম কাপড় ব্যবসায়ী আব্দুস সালাম বলেন, এ বছর পুরনো জ্যাকেটের বেল পাইকারি কিনতে হচ্ছে ৮-১০ হাজার টাকায়। কার্ডিগান ৬ থেকে ১২ হাজার টাকা। হুডি ৩ থেকে ৫ হাজার টাকা। মাফলার ২ থেকে ৩ হাজার টাকা। টুপি দেড় থেকে ২ হাজার টাকা ও কম্বল ১২ থেকে ২২ হাজার টাকা। বিক্রি করতে পারলে বেল ভেদে দেড় ২ হাজার টাকা লাভ হয়। চীন, তাইওয়ান, জাপান ও কোরিয়া থেকে পুরনো কাপড়ের গাইড আসে। ঢাকা থেকে কিনে এনে স্বল্প লাভে বিক্রি করি। গত ২ বছর করোনার কারণে লাভের মুখ দেখিনি। এবার হঠাৎ প্রচণ্ড ঠাণ্ডা পরায় পুরনো গরম কাপড়ের চাহিদা বেড়েছে। বিক্রিও বেড়েছে বেশ।
মৌসুমী এই শীতের কাপড় ব্যবসায়ী আরও বলেন, শীতে পুরনো শীতবস্ত্র বিক্রি করে সংসারে বাড়তি আয় হয়। অন্য সময় সাংসারিক কাজ করি। শীতে পুরনো শীতবস্ত্র ফুটপাথে বিক্রি করি।
আব্দুস সালামের মতো কয়েক শ’ মৌসুমী ব্যবসায়ী শেরপুর জেলার ঝিনাইগাতী, শ্রীবরদী ও নালিতাবাড়ী উপজেলার বিভিন্ন হাট-বাজারে পুরনো শীতবস্ত্র বিক্রি করেন।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, শীতের তীব্রতা বাড়ায় গরম কাপড়ের চাহিদা বেড়েছে। জেলা শহর শেরপুরের সাথে যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো হওয়ায় ব্যবসাও জমে উঠেছে।
ঝিনাইগাতী উপজেলা সদরে শীতের গরম কাপড় কিনতে আসা কুশাইকুড়া গ্রামের মাওলানা আশরাফুল ইসলাম ও গান্দিগাও গ্রামের সাজ্জাদুল ইসলাম বলেন, এবার শীতবস্ত্রের দাম অনেক বেড়েছে। জ্যাকেট, মাফলার ও টুপি কিনেছি ছেলে-মেয়ে ও স্ত্রীর জন্য। পুড়াতন গরম পোশাক কম দামে প্রতি বছর পরিবারের সবার জন্য কিনতে আসি।
মধ্যবাজারের তাহমিনা ফ্যাশন হাউস মালিক আলম বলেন, শীতে বেচাকেনা বেশি হচ্ছে না। গ্রাহকরা পুরাতন শীতের কাপড় কম দামে পেয়ে বেশী কিনছে। কাপড় ব্যাবসায় শত শত ব্যবসায়ীর কর্মসংস্থান হলেও সরকারি সুযোগ-সুবিধা নেই। তাই অনেক ব্যবসায়ী এনজিওর ঋণ নিয়ে সর্বস্বান্ত হচ্ছেন বলে জানান নাম প্রকাশ না করার শর্তে ক’জন ব্যবসায়ী।
শেরপুর জেলা প্রশাসক আব্দুল্লাহ আল খায়রুম বলেন, শেরপুর জেলায় তাপমাত্রা ১২ ডিগ্রিতে নেমেছে। শীতার্তদের এ পর্যন্ত ৩১ হাজার ৬৫০ পিস কম্বল বরাদ্দ পেয়ে বিভিন্ন উপজেলা প্রশাসনের মাধ্যমে বিতরণ চলমান রয়েছে।
ঝিনাইগাতী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ ভূঁইয়া বলেন, বরাদ্দকৃত কম্বল ৭ ইউপি চেয়ারম্যানকে দিয়ে বিভিন্ন ইউনিয়নের শীতার্ত মানুষের মাঝে বিতরণ করা হচ্ছে। আমি নিজে ঘুরে ঘুরে বাড়ি বাড়ি গিয়ে কিছু কম্বল হতদরিদ্র মানুষের মাঝে বিতরণ করেছি। বিতরণ অব্যাহত রয়েছে।
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সাইফুল আলম তুহিন
ইমেইল: news@pratidinermymensingh.com
©সর্বস্বত্ব ২০১৬-২০২৪ | প্রতিদিনের ময়মনসিংহ