ময়মনসিংহ ০৫:২৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২৪ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

শ্রীবরদীতে ঢেওফা নদীর বাঁধ ভেঙে হুমকির মুখে ৫ গ্রাম

ছবি: প্রতিদিনের ময়মনসিংহ

ময়মনসিংহ: শেরপুরের শ্রীবরদী উপজেলার মাটিফাটা গ্রামের ঢেওফা নদীর বাঁধ ভেঙে পড়ায় ভয়াবহ বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে আশপাশের অন্তত পাঁচটি গ্রাম। বাঁধ ভেঙে যাওয়ার পর থেকে গ্রামগুলোতে আতঙ্ক ও অশান্তি বিরাজ করছে। মুহূর্তেই নদীর পানি ফসলি জমি ও বসতবাড়িতে ঢুকে পড়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। এতে প্রায় দুই হাজার একর জমির ধান, পাট, শাকসবজিসহ মৌসুমি ফসল পানিতে তলিয়ে যাওয়ার ঝুঁকিতে পড়েছে।

ক্ষতিগ্রস্ত গ্রামগুলো হলো বড়ুকুচি, মাটিফাটা, চুকচুকি, চক্রপুর, হাতিবর ও হাঁসধরা। এসব গ্রামে বসবাসরত কয়েক হাজার মানুষ এখন দিন-রাত আতঙ্কে সময় পার করছেন।

বড়ুকুচি গ্রামের ডাক্তার এরশাদ আলম চোখেমুখে উৎকণ্ঠা নিয়ে বলেন, “আমরা প্রতিদিন দোয়া করি যেন নদীর পানি আর না বাড়ে। বাঁধ ভেঙে যাওয়ার পর থেকে সারাক্ষণ আতঙ্কে আছি। কখন যে ঘরে পানি ঢুকে পড়ে আর সবকিছু ভেসে যায় বলার উপায় নেই।

কৃষক আমির হোসেন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, এ বাঁধ মেরামতের জন্য বহুবার দাবি জানিয়েছি। কিন্তু কেউ কান দেয়নি। এখন ফসল তো গেলই, মানুষও আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে। কখন যে ঘরবাড়ি ভেসে যায়, তা বলা মুশকিল।”

স্থানীয় বাসিন্দা লাজু মিয়া বলেন, হঠাৎ করে পানি ঢুকে পরলে আমাদের জানমাল অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। আমরা দ্রুত টেকসই বাধ চাই।

চক্রপুর গ্রামের রঞ্জু জানান, “বাঁধটি অনেকদিন ধরেই ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় ছিল। অতিবৃষ্টি হলেই পানি চাপ বেড়ে বাঁধ ভেঙে যায়। এতে প্রতিবছর ৫ গ্রামের মানুষ ফসল হারিয়ে সর্বস্বান্ত হয়। আমরা দ্রুত টেকসই ও মজবুত বাঁধ চাই।

স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা জানান, বিষয়টি উপজেলা প্রশাসন ও পানি উন্নয়ন বোর্ডকে জানানো হয়েছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। যতদিন টেকসই বাঁধ নির্মাণ না হবে, ততদিন এ অঞ্চলের মানুষ নদী ভাঙন ও বন্যার আতঙ্কে স্বস্তি ফিরে পাবে না।

শ্রীবরদী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ জাবের আহম্মেদ  বলেন, আমরা পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছি। মানুষের জানমাল ও অবকাঠামো রক্ষায় জরুরি পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

এদিকে, গ্রামের সাধারণ মানুষ বলছেন, কেবল আশ্বাস নয় দ্রুত বাঁধ সংস্কার ও টেকসই প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা না নিলে হাজারো মানুষকে মানবিক বিপর্যয়ের মুখে পড়তে হবে।

বিষয়:
জনপ্রিয়

শেরপুরে শিশু ধর্ষণের অভিযোগে বৃদ্ধ গ্রেফতার

শ্রীবরদীতে ঢেওফা নদীর বাঁধ ভেঙে হুমকির মুখে ৫ গ্রাম

প্রকাশের সময়: ০৭:১০:২০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫

ময়মনসিংহ: শেরপুরের শ্রীবরদী উপজেলার মাটিফাটা গ্রামের ঢেওফা নদীর বাঁধ ভেঙে পড়ায় ভয়াবহ বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে আশপাশের অন্তত পাঁচটি গ্রাম। বাঁধ ভেঙে যাওয়ার পর থেকে গ্রামগুলোতে আতঙ্ক ও অশান্তি বিরাজ করছে। মুহূর্তেই নদীর পানি ফসলি জমি ও বসতবাড়িতে ঢুকে পড়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। এতে প্রায় দুই হাজার একর জমির ধান, পাট, শাকসবজিসহ মৌসুমি ফসল পানিতে তলিয়ে যাওয়ার ঝুঁকিতে পড়েছে।

ক্ষতিগ্রস্ত গ্রামগুলো হলো বড়ুকুচি, মাটিফাটা, চুকচুকি, চক্রপুর, হাতিবর ও হাঁসধরা। এসব গ্রামে বসবাসরত কয়েক হাজার মানুষ এখন দিন-রাত আতঙ্কে সময় পার করছেন।

বড়ুকুচি গ্রামের ডাক্তার এরশাদ আলম চোখেমুখে উৎকণ্ঠা নিয়ে বলেন, “আমরা প্রতিদিন দোয়া করি যেন নদীর পানি আর না বাড়ে। বাঁধ ভেঙে যাওয়ার পর থেকে সারাক্ষণ আতঙ্কে আছি। কখন যে ঘরে পানি ঢুকে পড়ে আর সবকিছু ভেসে যায় বলার উপায় নেই।

কৃষক আমির হোসেন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, এ বাঁধ মেরামতের জন্য বহুবার দাবি জানিয়েছি। কিন্তু কেউ কান দেয়নি। এখন ফসল তো গেলই, মানুষও আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে। কখন যে ঘরবাড়ি ভেসে যায়, তা বলা মুশকিল।”

স্থানীয় বাসিন্দা লাজু মিয়া বলেন, হঠাৎ করে পানি ঢুকে পরলে আমাদের জানমাল অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। আমরা দ্রুত টেকসই বাধ চাই।

চক্রপুর গ্রামের রঞ্জু জানান, “বাঁধটি অনেকদিন ধরেই ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় ছিল। অতিবৃষ্টি হলেই পানি চাপ বেড়ে বাঁধ ভেঙে যায়। এতে প্রতিবছর ৫ গ্রামের মানুষ ফসল হারিয়ে সর্বস্বান্ত হয়। আমরা দ্রুত টেকসই ও মজবুত বাঁধ চাই।

স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা জানান, বিষয়টি উপজেলা প্রশাসন ও পানি উন্নয়ন বোর্ডকে জানানো হয়েছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। যতদিন টেকসই বাঁধ নির্মাণ না হবে, ততদিন এ অঞ্চলের মানুষ নদী ভাঙন ও বন্যার আতঙ্কে স্বস্তি ফিরে পাবে না।

শ্রীবরদী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ জাবের আহম্মেদ  বলেন, আমরা পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছি। মানুষের জানমাল ও অবকাঠামো রক্ষায় জরুরি পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

এদিকে, গ্রামের সাধারণ মানুষ বলছেন, কেবল আশ্বাস নয় দ্রুত বাঁধ সংস্কার ও টেকসই প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা না নিলে হাজারো মানুষকে মানবিক বিপর্যয়ের মুখে পড়তে হবে।