ময়মনসিংহ ০৫:২৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২৪ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

চার দফা দাবিতে ৮০৯ কর্মচারীর গণছুটি, নেত্রকোনায় বিদ্যুৎ বিপর্যয়

ময়মনসিংহ: চার দফা দাবিতে আন্দোলনের অংশ হিসেবে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ৮০৯ কর্মকর্তা-কর্মচারী একযোগে গণছুটিতে চলে গেছেন। এর ফলে পুরো নেত্রকোনা জেলায় দেখা দিয়েছে ভয়াবহ বিদ্যুৎ বিপর্যয়। সাধারণ গ্রাহক থেকে শুরু করে মৎস্যচাষীরা পড়েছেন চরম ভোগান্তিতে।

গত বৃহস্পতিবার থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মচারীরা কর্মস্থল ত্যাগ করেন। এরপর থেকেই জেলার বিভিন্ন এলাকায় বিদ্যুৎ সঙ্কট চরম আকার ধারণ করেছে। শনিবার দিনভর বারহাট্টা, দুর্গাপুর, পূর্বধলা, মোহনগঞ্জ, আটপাড়া ও আশপাশের গ্রামগুলোতে বিদ্যুৎ ছিল না। কোথাও কোথাও সাময়িকভাবে লাইন সচল হলেও অনেক এলাকায় টানা ২৪ ঘণ্টা বিদ্যুৎহীন অবস্থা তৈরি হয়।

আন্দোলনকারীরা জানান, দীর্ঘদিন ধরে বিদ্যুৎ সিস্টেম সংস্কার, আরইবির শোষণ-নিপীড়ন বন্ধ করা এবং নিম্নমানের মালামাল ব্যবহার রোধসহ চার দফা দাবি জানিয়ে আসছিলেন তারা। এ দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভসহ নানা কর্মসূচি পালন করা হলেও কর্তৃপক্ষ কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। বরং আন্দোলনে সক্রিয় থাকার কারণে সম্প্রতি চারজনকে সাময়িক ও দুইজনকে স্থায়ীভাবে বরখাস্ত করা হয়। এর প্রতিবাদেই তারা গণছুটি ঘোষণার সিদ্ধান্ত নেন।

বিদ্যুৎ না থাকায় ভুক্তভোগী গ্রাহকরা বিপাকে পড়েছেন। বারহাট্টার বাট্টাপাড়া এলাকার সোহাগ মিয়া ও আব্দুর রাজ্জাক বলেন, “বিদ্যুৎ না থাকায় দোকানের ফ্রিজে রাখা জিনিস নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। ক্রেতারা নিতে চাইছেন না। শিশু-বৃদ্ধ সবাই কষ্টে আছে। পুকুরে অক্সিজেনের অভাবে মাছ মরে ভেসে উঠছে।”

পল্লী বিদ্যুতের জেনারেল ম্যানেজার মো. আকরাম হোসেন বলেন, “আল্লাহর রহমতে বৃষ্টি নেই, তাই বড় ধরনের সমস্যা হয়নি। তবে যেসব এলাকায় সমস্যা দেখা দিচ্ছে, সেখানে ঠিকাদারের মাধ্যমে বিদ্যুৎ সচল রাখার চেষ্টা চলছে।”

জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবদুল্লাহ আল মাহমুদ জামান জানান, “গ্রাহকরা যাতে চরম ভোগান্তিতে না পড়েন সেজন্য বিদ্যুৎ বিভাগের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখা হচ্ছে। সার্বক্ষণিক বিদ্যুৎ সচল রাখতে আলোচনা অব্যাহত আছে।”

উল্লেখ্য, নেত্রকোনায় প্রায় ৬ লাখ ৫০ হাজার গ্রাহকের জন্য রয়েছে ২৬টি অভিযোগ কেন্দ্র, ২০টি সাব-স্টেশন এবং ১২টি জোনাল অফিস। তবে কর্মচারীদের গণছুটির কারণে সব কেন্দ্রেই এখন সেবা কার্যত বন্ধ হয়ে গেছে।

জনপ্রিয়

শেরপুরে শিশু ধর্ষণের অভিযোগে বৃদ্ধ গ্রেফতার

চার দফা দাবিতে ৮০৯ কর্মচারীর গণছুটি, নেত্রকোনায় বিদ্যুৎ বিপর্যয়

প্রকাশের সময়: ১০:১৫:১৮ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫

ময়মনসিংহ: চার দফা দাবিতে আন্দোলনের অংশ হিসেবে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ৮০৯ কর্মকর্তা-কর্মচারী একযোগে গণছুটিতে চলে গেছেন। এর ফলে পুরো নেত্রকোনা জেলায় দেখা দিয়েছে ভয়াবহ বিদ্যুৎ বিপর্যয়। সাধারণ গ্রাহক থেকে শুরু করে মৎস্যচাষীরা পড়েছেন চরম ভোগান্তিতে।

গত বৃহস্পতিবার থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মচারীরা কর্মস্থল ত্যাগ করেন। এরপর থেকেই জেলার বিভিন্ন এলাকায় বিদ্যুৎ সঙ্কট চরম আকার ধারণ করেছে। শনিবার দিনভর বারহাট্টা, দুর্গাপুর, পূর্বধলা, মোহনগঞ্জ, আটপাড়া ও আশপাশের গ্রামগুলোতে বিদ্যুৎ ছিল না। কোথাও কোথাও সাময়িকভাবে লাইন সচল হলেও অনেক এলাকায় টানা ২৪ ঘণ্টা বিদ্যুৎহীন অবস্থা তৈরি হয়।

আন্দোলনকারীরা জানান, দীর্ঘদিন ধরে বিদ্যুৎ সিস্টেম সংস্কার, আরইবির শোষণ-নিপীড়ন বন্ধ করা এবং নিম্নমানের মালামাল ব্যবহার রোধসহ চার দফা দাবি জানিয়ে আসছিলেন তারা। এ দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভসহ নানা কর্মসূচি পালন করা হলেও কর্তৃপক্ষ কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। বরং আন্দোলনে সক্রিয় থাকার কারণে সম্প্রতি চারজনকে সাময়িক ও দুইজনকে স্থায়ীভাবে বরখাস্ত করা হয়। এর প্রতিবাদেই তারা গণছুটি ঘোষণার সিদ্ধান্ত নেন।

বিদ্যুৎ না থাকায় ভুক্তভোগী গ্রাহকরা বিপাকে পড়েছেন। বারহাট্টার বাট্টাপাড়া এলাকার সোহাগ মিয়া ও আব্দুর রাজ্জাক বলেন, “বিদ্যুৎ না থাকায় দোকানের ফ্রিজে রাখা জিনিস নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। ক্রেতারা নিতে চাইছেন না। শিশু-বৃদ্ধ সবাই কষ্টে আছে। পুকুরে অক্সিজেনের অভাবে মাছ মরে ভেসে উঠছে।”

পল্লী বিদ্যুতের জেনারেল ম্যানেজার মো. আকরাম হোসেন বলেন, “আল্লাহর রহমতে বৃষ্টি নেই, তাই বড় ধরনের সমস্যা হয়নি। তবে যেসব এলাকায় সমস্যা দেখা দিচ্ছে, সেখানে ঠিকাদারের মাধ্যমে বিদ্যুৎ সচল রাখার চেষ্টা চলছে।”

জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবদুল্লাহ আল মাহমুদ জামান জানান, “গ্রাহকরা যাতে চরম ভোগান্তিতে না পড়েন সেজন্য বিদ্যুৎ বিভাগের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখা হচ্ছে। সার্বক্ষণিক বিদ্যুৎ সচল রাখতে আলোচনা অব্যাহত আছে।”

উল্লেখ্য, নেত্রকোনায় প্রায় ৬ লাখ ৫০ হাজার গ্রাহকের জন্য রয়েছে ২৬টি অভিযোগ কেন্দ্র, ২০টি সাব-স্টেশন এবং ১২টি জোনাল অফিস। তবে কর্মচারীদের গণছুটির কারণে সব কেন্দ্রেই এখন সেবা কার্যত বন্ধ হয়ে গেছে।