
ময়মনসিংহ: জামালপুরের মেলান্দহ উপজেলায় চোর সন্দেহে রিপন মিয়া (৪০) নামের এক যুবককে গাছে বেঁধে রাতভর পেটানোর পর তাঁর মৃত্যু হয়েছে। শুক্রবার গভীর রাতে এ ঘটনা ঘটে। শনিবার বেলা ১১টার দিকে উপজেলার ঝাউগড়া ইউনিয়নের রেহাই পলাশতলা এলাকা থেকে তাঁর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
নিহত রিপন মিয়া ওই এলাকার মো. মোফাজ্জলের ছেলে। পেশায় তিনি একজন ট্রাকচালক ছিলেন। পুলিশের দাবি, রিপন চুরির সঙ্গে জড়িত ছিলেন এবং তাঁর বিরুদ্ধে মেলান্দহসহ আশপাশের থানায় অন্তত আটটি মামলা রয়েছে।
পুলিশ, স্থানীয় লোকজন ও পরিবারের সূত্রে জানা যায়, রিপন দীর্ঘদিন ধরে চট্টগ্রামে ট্রাক চালাতেন। গত বৃহস্পতিবার তিনি গ্রামের বাড়িতে আসেন। শুক্রবার রাত আনুমানিক আড়াইটার দিকে প্রতিবেশী বোরহান উদ্দিনের ঘরে চুরির অভিযোগ ওঠে তাঁর বিরুদ্ধে। এ সময় স্থানীয় লোকজন তাঁকে ধরে গাছের সঙ্গে বেঁধে রাখে এবং সারা রাত পেটাতে থাকে। শনিবার সকালে তাঁর মৃত্যু হয়। খবর পেয়ে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে জামালপুর জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।
নিহতের বড় ভাই রফিকুল ইসলাম বলেন, “দুই বছর আগে রিপন এলাকায় কিছু চুরির ঘটনায় জড়িত ছিলেন। তখন সবাই তাঁকে বাড়ি থেকে দূরে গিয়ে কাজ করার পরামর্শ দেয়। পরে তিনি চট্টগ্রামে গিয়ে ট্রাক চালানো শুরু করেন এবং ভালোভাবে জীবনযাপন করছিলেন। সম্প্রতি তিনি মাঝে মধ্যে বাড়িতে আসতেন। গত রাতে তিনি একজনের কাছে পাওনা টাকা আনতে গিয়েছিলেন। এরপর আমরা খবর পাই তাঁকে ডেকে নিয়ে হত্যা করা হয়েছে। আমরা এর সুষ্ঠু বিচার চাই।”
রিপনের ভাবি আনোয়ারা বেগম বলেন, “সকালে গিয়ে দেখি, তাঁর মুখ দিয়ে লালা পড়ছে। মরার আগে পানি চাইছিল, কিন্তু কেউ পানি দেয়নি। বরং বুকে লাথি মারা হয়। বাঁধন ঢিলা করতে বললেও তাঁকে ছাড়েনি। এভাবেই তাঁকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে।”
ঘটনার পর থেকে অভিযুক্ত বোরহান উদ্দিন ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা আত্মগোপনে আছেন। তাঁদের কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
মেলান্দহ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) স্নেহাশিস রায় বলেন, “শনিবার সকাল নয়টার দিকে খবর পাই এলাকায় গণপিটুনিতে একজন মারা গেছেন। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করেছে। এখনো কাউকে আটক করা যায়নি। এ ঘটনায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।”